Thursday 29 June 2017

কবিতা

শ্রীজাতা কংসবণিক


স্রোত


অথচ, আগল দিতে চেয়ে তুমি দিক হারিয়েছো,জল,
সময়ে সময় বাঁধা পড়ে, স্রোতের ভেতরে স্রোত
আমার ভেতরে বাঁধা পড়ে গেছে কত অদৃশ্য জঞ্জাল...
আমি কে ছিলাম, তা কেউ জানতো না
এমনকি সেইন্টের গীর্জার পাশ দিয়ে যে অন্তর্যামী গাছ রোজ রাতে হেঁটে চলে যায়, আবার ফিরে আসে,
সেও জানে নি আমার হারানো দিনগুলো
কীভাবে অতলে থেকে গেছে আজও
তুমি স্রোত হয়ে উঠে আরো এক স্রোতের কিনারে বসে
অপেক্ষায় ছিলে
যেন, কেউ এসে পথ খুঁজে নিলে তুমি ঢুকে যাবে মাটির গভীরে...



পৃথিবীতে


একদিন জলের তলায় দেখি
হাজার হাজার ফুল একইরকম
অনেক মাছের রঙ কমলা হলুদ ডোরাকাটা
বেগুনী সমস্ত পাখি জলের তলায় ওড়ে
আমার তখন একটা জলপাই রঙের জ্যাকেটে
              এই অনেকের মধ্যে ঢুকে যেতে ইচ্ছে করে খুব
একদিন বুঝেছি, বুঝেছি সঠিক নয়
দেখেছি বলাই ভাল,
পৃথিবীতে আমি নেই, অথবা পৃথিবী আমাতে নেই
দূর দুই পাইনের ফাঁকে মুখ নীচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে
অথবা, বেওয়ারিশ পড়ে আছে পথে প্রান্তরে, আকাশে আরো কোথায় কোথায় যেন ...
সেদিন প্রথম মনে হলো, পৃথিবী আমার নয়,পৃথিবী নিতান্তই আমার আত্মীয়স্বজনের
পৃথিবী নিতান্তই সেই অনেক মাছের, অনেক ফুলের, অনেক গাছের...


বিলুপ্তি

দলিল দস্তাবেজ যত আছে, পুড়িয়ে ফেলার আগে
একবার জেনে নিতে হয়
আততায়ীর ঠিকানা...

তবু এতদিন পরে, মাটির তলার জলে...
তারও নীচের সাম্রাজ্যে যে উপনিবেশ গড়ে উঠেছিল,
সেখানে অক্ষত রক্ত, দাগ নিয়ে পড়ে আছে
মৃত এক পাখির ডানা

সেই সব ক্ষত মুছে দিয়ে, মাটিকে বানাব সিংহাসন
জলকে বানাব তারই ধানক্ষেত

আমার কেবল আছে একটি সোনার চাবি...

পুরোনো দলিল যত আছে, পুড়িয়ে ফেলার আগে
একবার জেনে নিতে হবে
সভ্যতায় ক্ষমতার দাবী.....



No comments:

Post a Comment