Thursday 29 June 2017

কবিতা

রেহান কৌশিক



ভাষ্য


কবিতা লিখিনি আজও। সে-সাহস জন্মায়নি এখনও।
ধারাভাষ্য লিখে রাখি অনন্ত, তোমার।

যেমন বৃষ্টির জল নিঃশব্দ আলোয় ধ’রে রাখে
                বিষাদের নীল-পান্ডুলিপি
                         জানালার ভিজে-অন্ধকার!
বিকেল যখন ভেঙে পড়ে
ছোট ছোট রোদ আর সস্তা-ফ্রকের কিশোরী
        রূপকথা লিখে রাখে গলির ভিতরে!

এ রকম কত আভা দিগন্তের সুদূর আভায়
মিশে মিশে মেঘ হয়, বৃষ্টি জন্মায়!

এ সব কবিতা নয়। নেই মাত্রা, দল, পর্ব। নেই কোনওখানে।
জেগে থাকে শুধু আলো, কোনও এক আশ্চর্য আত্মার!

কবিতা লিখিনি আজও। সে- সাহস জন্মায়নি এখনও।
ধারাভাষ্য লিখে রাখি অনন্ত, তোমার।



দ্রোহগান

শৃঙ্খল


আজন্ম দেখেছি আমি অবাধ বাণিজ্যের কাছে
মানুষের আত্ম-বিপণন।

সুতরাং পাখি নয়, সবুজ জঙ্গল নয়
নিরন্তর ডাক দেয় শুধু
হেঁটে চলা মিছিলের তীব্র আগ্রাসন!

ধর্মঘটি মানুষের তামাটে চোয়াল সহ্য করে
                   যত বিষ, চতুর ছোবল
আমার ঘুমের দেহে অহরহ মিশে যেতে থাকে
সেই সব মৃত্যুগামী শোষিতের আর্ত কোলাহল...

পাখিদের বিস্তৃত ডানায়
শুকিয়ে গিয়েছে দেখি উড়ানের দূর সম্ভাবনা
তছ্‌নছ্‌ হয়ে আছে ঠোঁট থেকে ঠোঁটে
                     চুম্বনের সমস্ত কল্পনা!

তুমি কি চাইলেই আমি যেতে পারি সমুদ্রে কোথাও
কুড়োবো রঙিন নুড়ি সুবিস্তৃত জলের কিনারে?

আমার যে হাঁটা থাকে, প্রতিদিন মিছিলে মিছিলে
রক্ত-শূন্য মানুষের গাঢ় অন্ধকারে।


 

এই দ্রাবিড়-জন্ম


কিছুই হল না আর
রাত্রিদিন জুয়া খেলে অন্নহীন এই বেঁচে থাকা...

তুমিও বলোনি কিছু! দেখি স্থির হয়ে পড়ে থাকে
তোমার মুখের ছায়া পাথরে, খনিজে...

ওঠে নামে খনির শ্রমিক
মিশে থাকে রক্ত-ঘাম প্রকাশ্য পাঁজরে
নেই কোনও নিশ্চয়তা ফিরবে কিনা তরুণীর
                     আহ্লাদিত গা- ধোওয়া বিকেল!

পুঁতেছে পুঁইয়ের বীজ তবু
সবুজ লাবণ্য যদি কোনওদিন ছুঁতে পারে
                            ছাউনির টালি!

অসম্ভব কিছু কিছু বিশ্বাস নিয়েই
মানুষেরা শ্বাস নেয়, জুয়া খেলে উঠে দাঁড়ানোর...

আমার দ্রাবিড় জন্ম আর্যদের অত্যাচারে
ধূলিসাৎ হয়েছে অনেক...



No comments:

Post a Comment