Wednesday 28 June 2017

গল্প

ভূত অথবা স্বপ্ন দৃশ্য

 কৃষ্ণা মালিক



সবেমাত্র রুপোর কাঠিটি ডানহাতে নিয়ে রাজকন্যের গায়ে ঠেকাতে গেছে - বন্ধ দু'চোখের পাতা যেন গোলাপি আভা পদ্মের পাপড়ি ! কী বলবে, যেন মনে হয় চিরকাল অমনি ঘুমাক কন্যেআর অনন্ত কাল সে এভাবেই দেখে যাক ঘুমন্ত মুখের মধুরতা দেখে বলতে কি, যেন সে গলে যাবেতবু তার সাধও হয় একবার চোখ মেলে তার দিকে তাকাক সেএবার কাঠিটি ছোঁয়াবেতার দিকে প্রগাঢ়  দৃষ্টিতে তাকাবে -...
       কিন্ত ফাৎনা কি একটা? কে এক বেরসিক চেয়ারের আলগা হাতলটায় বাজে রকমের ঠকঠক আওয়াজে দিল স্বপ্নটাকে মাটি করেআজ পর্যন্ত তার দিকে ঘুমন্ত হুরিপরী চোখ মেলে তাকাল না কবে যে তাকাবে! আজ প্রায় হয়ে এসেছিলকিন্তু সাধ না মিটিল, আশা না পুরিল বরাবর কোনো না কোনো ফাৎনা জুটে যায় অভয়পদর স্বপ্নের সরোবরে ঢিল ছুঁড়তে
    বেঞ্চে উঠে বসে ঘুমন্ত চোখ ( না কি আধ ঘুমন্ত কে  জানে) রগড়ে ব্যাজার মুখে খদ্দেরের  দিকে তাকায় চোখের ইশারায় চেয়ারে বসতে  বলে জল স্প্রে করে হাতে চিরুনি কাঁচি তুলে নেয়মনটা স্বপ্নের কথা ভেবে খচখচ করলেও খদ্দের তার লক্ষ্মীচিরুনি কাঁচি না তুললে সবেধন স্বপ্নের ভূত- ভবিষ্যৎ চটকে মটকে কবে একদম ফুড়ুৎ হয়ে যাবে! একবার ঘাড় নীচু অবস্থাতেই আড়চোখে  খদ্দেরটি আয়নার দিকে তাকিয়ে নেয় চুল কাটা বিষয়ে সন্তুষ্ট হয়ে অভয়পদকে বলে,এঃ!তোমার আযনার কাচ তো একেবারে কয়েত হয়ে গেছে,অভয়দামুখটা ভালো দেখা যাচ্ছে নাওটাকে এবার পাল্টাও
           কাঁচির দুটো প্লেটকে ঘষে নেয় অভয় এভাবে কাঁচির প্রান্তেের তীক্ষ্ণতা বাড়ে হয়তোকিংবা তার চলক্ষমতা বাড়েচুল কাটতে কাটতে খদ্দেরেের কথার জবাব দেয়
             কিনব রে বাবা কিনব! এই ঠেক 'দিন থাকে দেখিশুনছি তো রাস্তা চওড়া হবে,ফোর লেন - বোঝেচ?
       এমন কথা কয়েকদিন ধরেই শোনা যাচ্ছে বাজারময়খবর যখন রটেছে ঘটনাও নিশ্চয় ঘটবেচিন্তা শুরু হয়েছে রাস্তার ধারে যাদের প্রথম প্লটে দোকান বা ফুটপাতের দোকানীদের তবে সেসব এখনও তেমন দানা বাঁধেনি
       এই সেলুনে অভয়পদর অনেকদিনতখন তার নাক টিপলে দুধ বেরোয় অথচ খদ্দেরের দাড়িতে সাবান ঘষতো, দাড়ি কামাতো সেলুনটা ছিল শিশিরদারচুল ছাঁটা গোঁফ ছাঁটা এসব শিশিরদা নিজেই করতো অভয়পদ তখন 'দশ বছর হয়তো বাবা আধ খ্যাপাটে কাজকম্মে লবডঙ্কাভাইবোন চার পাঁচটি মা লোকের বাড়ি কাজ করে চেয়েচিন্তে চালানোর চেষ্টা করতোতার আগে দুই দাদা-দিদি দিদিরও লোকের বাড়ির কাজ শিশিরদা ভালো মানুষ
        মা তার কাছে কেঁদে ফেললে, ছেলেটাকে বাজারে কোনো একটা কাজে ঢুকিয়ে দাও, ভাই! না-হয় তোমার কাছেই রাখোফাই-ফরমাশ খাটবেদুপুরে দুটি ভাত দিও শিশিরদারই বা কী আয়? তবু রয়ে গেল অভয়পদ
         বদল বলতে বছর তিনেক আগে অকালে শিশিরদার ভবলীলা সাঙ্গ আর অভয়পদ এখন উনিশ-কুড়িসেলুনের মালিক এখন সে নিজেমেয়েকে নিয়ে শিশিরদার বৌ বাপের বাড়িতে থাকেতাই অলিখিত মালিকানা তার মাসে উপার্জনের  একটা অংশ বৌদিকে দিতে চাইলেও সে নেয় না
      তবে 'পাট চুকলো বলেতারপর কোন্ বন্দরে বান্দর স্থানান্তরিত হবে তা নিয়ে বড় ভাবিত সে নয়তার ভাবনা অন্য সম্পত্তি বলতে খান চারেক চেয়ার একটা হাতল ভাঙা চেয়ারের সামনে একটা করে আয়না ফিট করাদেয়ালে গোটাকতক ক্যালেন্ডার, একটা সিলিং পাখা আর একটা সামান্য ঘরঘরে আওয়াজ তোলা টেবিল ফ্যান,সেটা রাখা আছে একটা বেঞ্চের পাশে ফলের পেটি জাতীয় একটা বাক্সের উপর এছাড়া ক্ষুর কাঁচি চিরুনি ফটকিরি লোশন ইদানিং অন্য সেলুনবালাদের দেখাদেখি সে সস্তার ফেসিয়াল ক্রিম- ট্রিমও রেখেছে
         ইতিমধ্যে দুপুর রোদের ঝাঁঝ খানিকটা কমেছেপাশের ছাউনির সব্জিউলি কাননবালাদমছুট গরমে ডাঁই করা বস্তা থলের গায়ে হেলান দিয়ে হাঁ করে উদ্র্ধমুখী ঘুমোচ্ছিল এখন যে সে জেগেছে মধু ঢালা গলা শুনলে মালুম হয় আলু- পটল ঝিঙে জায়গায় জায়গায় আর এক প্রস্থ গুছিয়ে রাখতে রাখতে পুণ্যবানী ছাড়তে থাকে কোনো নিরিহ খদ্দের বোধহয় বেশি দরদাম করে ফেলেছে"লেবে তো লাও গো বাছা! আলু পটল তো আমার সোন্দরী কন্যে লয়  লেবে, বাড়ি গে রাঁধাবাড়া করবে , তারপর সে বেরোয়েও যাবে যেখানেই লেবে - এই জিনিস" একটুখানি বিরতি- কোন্ ঢ্যামনা রে, গাছের গায়ে সাইকেল রাখলি?
         অভয়পদর হাত ফাঁকা ছিলবাইরে আসে তাড়াতাড়িসেলুনের ঝাঁপের একপাশে রাস্তার ধারে গাছটাসেদিকে তাকিয়েই রেগে গেল সে বকুলগাছটা এখন বেশ ডাঁটোকয়েক বছরই বয়স হয়ে গেলউঁচু পর্দায় গলা তোলে শ্রীমান অভয়পদ
      এই! কার সাইকেল এখানে? এতটুকু গাছটার গায়ে সাইকেল ঠেসিয়েছ? কার সাইকেল? বলতে বলতে সাইকেল টেনে সরিয়ে রাখে
        গাছের তলাটা ঝকঝক করছে সবসময় সাফসুতরো করে রাখে অভয় কিচ্ছুটি সে এখানে রাখতে দেয় অনেকেই তার এই বিশেষ পছন্দের ব্যাপারটা জানে গাছের চারপাশ জুড়ে তিনখানা পাথর ফেলা মাঝে মাঝে তাদের নির্ভেজাল আড্ডা বসেকখনও কখনও সে উদাস হয়ে যায় একটা দৃশ্যই তার স্বপ্নে জাগরণে উঠে আসে সেটাও একটা গরমকাল কী করে যেন হঠাৎ একটা ছোটখাটো দুর্ঘটনা বাইকের ধাক্কায় ছিটকে পড়লো রাজকন্যার মতো সুন্দর এক মেয়ে আঘাত গুরুতর নয় বলেই মনে হলো, তবে চেতনা হারিয়েছিল অন্যেরা তার শুশ্রূষায় ব্যস্ত সে দ্যাখে, দুধ-সাদা গায়ের রঙ, বন্ধ চোখের পাতা যেন পদ্মের পাপড়ি কুঁচি দেওয়া ফিকে গোলাপি  শিফনের ফ্রক তার পরণে কোঁকরানো একমাথা চুল ছোট্ট বকুলগাছটার অল্প ছায়া তখনতার আলো ছায়া মুখে কী যে হয়ে গেল অভয়পদর! সেই আলোছায়া সেই ইস্তক তারই চোখেমুখে খেলা করে
    

স্বপ্নে আজ পর্যন্ত সেই কন্যের ঘুম ভাঙাতে পারল না সামান্য সেলুনবালা অভয়পদ কিন্তু তার মনের ভেতরে একখানা রাজপ্রাসাদ ফেঁদে বসে আছে খোশে আছে বটে সে! রোজই বাহারের গাছটিকে তাকিয়ে তাকিয়ে মুগ্ধ চোখে দ্যাখে
কাননমাসি ফুট কাটে তা দেখে কি রে মুখপোড়া, কবে ফুল ফুটবে তোর বকুল গাছে? তাকিয়ে দেখাই তো সার, বাছা! তোর গাছ থাকবে রে? কাটা পড়লো বলে! গিলে খাবার মতো করে তাকায় অভয়পদ তার পেত্যয় হয় না যে গাছ থাকবে না রাস্তার পেট বাড়ছে তো তার সেলুন খাক, সব্জিউলিকে খাক, ভাতের হোটেল খাক তা বলে গাছ কাটতে হবে কেন?
    এগাছ শিশিরদার বসানোকিন্তু জল দিয়ে, বেড়া দিয়ে,গরু-ছাগল মানুষের অত্যেচারের হাত থেকে রক্ষে করে তাকে বড় করে তুলেছিল তো শর্মাই মনে মনে ফুঁসতে থাকে সে গাছ সে কাটতে দেবে না এই তো গেল বছর বর্ষার সময় ইস্কুলের ছেলেমেয়েদের নিয়ে পঞ্চায়েত প্রধান, মাস্টারমশাই, দিদিমণিরা সব চ্যাঁচালো গাছ লাগাও, প্রাণ বাঁচাও চেঁচালো অবশ্য ছানাপোনা আর ক্যাডাররাবড় মানুষেরা সব গম্ভীর চালে হেঁটে গেল তবে তাদের যে ভালো মত সায় আছে তাদের ঠাটেই তা মালুমকেতা দেখে সেবার সে আর লক্ষ্মণ হ্যা হ্যা করে হেসেছিল মনে আছেকেমন যেন বিশ্বাসও এসে গেল তার, গাছগুলো নিশ্চয় বেঁচে যাবে
         দেখতে দেখতে বকুলগাছে কাক দম্পতি বাসা বানিয়ে ফেললো চিরকাল কোকিলের যা স্বভাব - নিশ্চয় ডিম পেড়ে গেছে কোন্ ফাঁকে  বাজার ফাঁকা হলে বকুলতলার সন্ধ্যা পরবর্তী আসরে সে কতদিন জমে গেলআলোচ্য বিষয় রাজ্য-রাজনীতিকট্টর সমর্থক তাদের দলে কেউ নেইতারা কায়ক্লেশে বাজারে দিনযাপনের ধান্দা করে তাদের শখও নেই, উচ্চাকাঙ্ক্ষাও নেই বহু বছর পর একটা দল বদলের হাওয়া উঠেছে এটা তারা বুঝে ফ্যালে একদল ঘর গড়ার কথা ভাবছে, একদল ঘর সামলাতে ব্যস্ত এর মাঝে মানুষের সুখ -দুঃখ সুবিধা-অসুবিধাকে থোরাই কেয়ার তাদের
       যখন ভূত ছেড়ে যায় ওঝা তাকে বলে, ' চিহ্ন রেখে যা'অমনি বড়  একটা গাছের ডাল বিনা ঝড়ে মট্ করে ভেঙে পড়ে আড্ডার ছেলেরা শুধু ধরতে পারে না যারা এতদিন ভূতের কেত্তন করলো সেই ভূত কোন্ ভাঙনের মধ্য দিয়ে যাবেদু-দলের মিছিল- মিটিং রোজ চলতে থাকে, অভয়পদ লক্ষ্য করেছে
          পরের দিন পঞ্চায়েত ঢ্যারা পেটালো দোকানপত্র সরাতে হবে রাস্তা চওড়া করা হবে হাতে পনের দিন সময় অন্যত্র বিল্ডিং হয়েছে বাজারের সেখানে অনেকেই দোকান নিয়ে ফেলেছে ইতিমধ্যে কেউ কেউ এদিক ওদিক করে দোকানঘর বা দোকান বসাবার জায়গা দেখে রেখেছেঅভয়পদর মতো কেউ কেউ ভাবতে চাইছিল যে শেষ পর্যন্ত এসব কিছু হবে না এই তো বছর তিনেক আগে রাস্তা চওড়া হলো সঙ্গে  সঙ্গে আবার কী করে একই কাজ হতে পারে
       কাননবালার গালাগাল কানে তোলা যাচ্ছে না এখন মন্ত্রী, এম এল , প্রধান সবার উপর তার রাগ 'দিন আগে সে তার দোকানে বাহারি চীনা বাতি ঝুলিয়েছে তার সঙ্গতি কম, পঞ্চায়েতের তৈরী পাকা দোতলার খুপড়ি সে ভাড়া নেবার কথা ভাবতে পারে না গোটা বাজার থমথমে তাদের জন্য তো আর উন্নয়ন বন্ধ হতে পারে না!
           অভয়পদর মুখ ঘোরালো হয়ে ওঠেক্যালেন্ডারের পাতা দুপুরে ফ্যানের গনগনে হাওয়ায় ফরফর করে ওড়ে তার আগের মতো ঘুম আসে না রাত্রে বাড়ি যাবার সময় বুকটা তার হু হু করে রাস্তার দু-ধারে যে বিরিক্ষগুলো কয়েক বছর আগে দেখেছে এখন তার একটাও নেই বদলে শুধু সোনাঝুরি
       অভয়পদর স্বপ্নের আয়ু সত্যিই বোধহয় শেষ হয়ে আসছেতার রাজকন্যের হদিশ পেয়েছে 'দিন হলোবাঁড়ুজ্জ্যেদের মেয়েকোথায় না কি ইংরিজি ইস্কুলে পড়েতার প্রাণের বন্ধু লক্ষণ খবর এনে দিয়েছেকিন্তু সে দেখতে চায় না তার মনে হয় স্বপ্নেরা তাকে আর ধরা দেবে না কিংবা স্বপ্নগুলো আর সুন্দর থাকবে না
        'শিশিরদার সেলুন'-এর ডান পাশে ফটিক কাকার চায়ের দোকান দোকানের সামনে একটা মোড়ায় বসে কালিমাখা হাতপাখা নাড়ছিলঅভয়কে ডাকেবাজারের অবস্থা নিয়ে কথা হয় তাকে মালপত্র সরিয়ে নিতে বলেসে কুন্ঠিত ভাবে বলে, কাকা, গাছটা কি কাটা পড়বে?         'কোথায় থাকিস বলতো! এই রুটের সব গাছই কাটা শুরু হয়ে গেছে যার যার এলাকা নিয়ে পঞ্চায়েতগুলো বিলি ব্যবস্থা করে নিয়েছেযাবার আগে সব খাবে
         খেলেই হলো?- অভয় ভাবেরাস্তা থেকে কতদূর পর্যন্ত কাটতে পারে? সব গাছই কি এক্তিয়ারে পড়ে গো? আপনমনে বিড়বিড় করতে করতে সরে যায় সেদিন বিকেলে সেলুনের জিনিসপত্র সরিয়ে নিল রাত্রে বাড়ি যাবার সময় বাজারটিকে কেমন ভূতুড়ে পরিত্যক্ত মনে হয় তারভাঙা দেওয়াল, সেড খোলা, কোথাও পলিথিন উড়ছে পাহারাদার মা কালি হিন্দু হোটেলে রাতে খানছয়েক রুটি খায় মাংসের ঝোল চেয়ে নিয়ে আর কী পাহারা দেবে? মানুষের রক্ষা করার ৃতো আর কী- বা আছে
       সকালে বাজারে ঢোকার মুখে দূর থেকে দেখতে পায় বহু মানুষের জটলা বুলডোজার এসেছে ভাঙা চলছে রাস্তার ধারের গাছের গায়ে গোল সাদা দাগগুলো লক্ষ্য করলো কারও রেহাই নেই তবে!
সেলুনের দিকে এগোয়বাজারে কেনাবেচা বন্ধকাননবালার মুখে আজ কথা নেইতার বগলে গোটানো ত্রিপল হাতে সেই চীনা ঝারবাতি ওকে দেখে চোখ মুছতে থাকে অভয়পদ সোজা তাকায়  বকুলগাছটার দিকেচোখদুটো ঠিকরে বেরিয়ে আসছে যেনবুলডোজার এগিয়ে আসছে! সবাই সরে যায়তার মাথা খারাপ হয়ে যায় যেন ভালবাসা আর স্বপ্নের মৃত্যু সে সহ্য করবে নাগাছটার নীচে সে নিশ্চল দাঁড়িয়ে থাকে নওলকিশোরের মতো অভয়পদ নওলকিশোর গাছটি আঁকড়ে গাছের পাশে গাছ হয়ে যায়
       রক্তপাত ঘাতকের রক্তের পিপাসা বাড়িয়ে দেয় না কি? বুলডোজার চালক এই ধ্বংসযজ্ঞে কিছু বাড়তি প্রেরণা পেয়ে গেছে ভেঙে চুরমার করার জন্যই সে নিযুক্ততার হাতের স্টিয়ারিং আরও এগিয়ে নেয় যন্ত্রটাকেকাঠুরের কাজও সে করবে ঠিক করেছে না কি? ভেঙে যায় বকুলের কিছু ডালপালাতার কান্ডে ধাক্কা লাগে, কাৎ হয়ে যায় গাছটি একটি পাখির বাসা খসে পড়ে মাটিতেডিম 'টা ভেঙে যায় আড্ডার কথা মনে পড়ে এই অবস্থাতেও বকুল গাছটির উপর দিয়েই কি তবে ভূতটা গেল? সত্যি  সত্যিই ভূতটা কি কখনও যায়! উঁহুসে বোধহয় অমরহ্যাঁচকা টানে তাকে কাননমাসি সরিয়ে নেবার আগেই একটা বাঁশের খুঁটো অভয়পদর পাঁজরে সজোরে লাগে দমবন্ধ হয়ে আসে তার গাছটির আঘাত দেখতে দেখতে নিজের কথা মনে থাকেনি চেতনা হারাতে হারাতে স্বপ্নদৃশ্যটা সে পেয়ে যায়
       রূপালি ডানা হাওয়ায় ভাসিয়ে দু-হাতে ফ্রকের গোলাপি প্রান্ত সামলে নেমে আসছে রাজকন্যা বাতাসে বকুল ফুলের মতো মিষ্টি গন্ধ তার চিকন দাঁত আলতো করে ধরে রেখেছে রূপোর কাঠিচোখ দুটো অপূর্ব - তার দিকেই তাকিয়ে আছে যেন
         রাস্তায় জ্যামে অনেক গাড়ি দাঁড়িয়ে গেছে চেতনার শেষ প্রান্তে পৌঁছে দেখতে পায় অভয়পদ সোনালি রঙের একটা কনটেসা গাড়ির জানলায় চেনা চেনা একটা মেয়ের মুখ                          

1 comment: